Friday, 21 October 2022

সঙ্গীতশিল্পী অখিলবন্ধু ঘোষ: স্মৃতিচারণা

 



It is basically a documentation of the life and works of great musician Akhilbandhu Ghosh. This has been done being inspired by the memory of professional stage artist Nripen Samaddar published on Facebook about Akhilbandhu.

RABI ROY, Admin



"উষ্ণ মরুর অভিশাপ লয়ে 

ঙ্গে গেছি আমি অবসাদে ক্ষয়ে

কণ্ঠ আমার দীর্ঘনিশ্বাসে ভুল সুরে গান গায়

তোমার ভুবনে ফুলের মেলা 

আমি কাঁদি সাহারায়


নৃপেনবাবু লিখেছেন, কয়েকদিন আগে আমার এক  বন্ধু তাঁর বাগানের অনেক ফুলের সাথে একটা কবিতা পোস্ট কোরেছিল।মন্তব্যে লিখেছিলাম, “তোমার ভুবনে ফুলের মেলা আমি কাঁদি সাহারায়”- লাইনটা অখিলবন্ধু ঘোষ-র একটি বিখ্যাত গানের প্রথম লাইন

আশির দশকের প্রথম দিকে, দক্ষিণ কলকাতার একটা রাস্তায় খোঁজ নিতে গিয়ে এক ভদ্রমহিলা একটা কাঁচা-পাকা দোতলা বাড়ি দেখিয়ে বলেছিলেন, “ওপরে অখিলবন্ধু ঘোষ থাকেন”।

আরও পড়ুন শতবর্ষে অখিলবন্ধু

বাইরের কাঠের সিঁরি দিয়ে উপরে গেলাম, অখিলবন্ধু নিজে দরজার পাল্লা খুলে ভেতরে ডাকলেন।

একটা চোদ্দ বাই দশ (আনুমানিক) ঘর, ওটাই বসার, শোবার, রান্নাঘর।

ওনার গায়ে ছেঁড়া গেঞ্জী, ঘরে একটা টেবিল, একটা তক্তাপোশ, তাকে কিছু কৌটো, আর শেষে জ্বলন্ত উনুন।

সেদিন চাঁদের আলো চেয়েছিল জানতে

প্রণাম কোরে বললাম, “আমি যুক্ত না, কিন্তু একটা সংগঠন অমুক তারিখে কলামন্দিরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে, আপনার মতামত জানতে চেয়েছে”।

বললেন, “আমি গাইব, তবে হারমোনিয়াম আর আর একজন তবলা শিল্পীর জন্য ট্যাক্সি ভাড়া আর তবলা শিল্পীকে গোটা তিরিশ টাকা দিতে হবে”।


বললাম, “আপনার পারিশ্রমিক?”

বললেন, “যা পারবেন তাতেই হবে, না দিতে পারলেও অসুবিধে নেই”

আমার গলা দিয়ে শব্দ বেরচ্ছিল না, বললাম, “আমি ওদের জানাব”। নীচে নেমে পড়লাম তাড়াতাড়ি।

কলামন্দিরের অনুষ্ঠানে উনি গিয়েছিলেন কিনা জানিনা। ওনার সাথে ঐ প্রথম দেখা- ঐ শেষ দেখা।দুহাজার ষোল বা সতের। উত্তম মঞ্চ। এক সংগঠনের বাৎসরিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

প্রথমে সংগঠনের সভ্য/সভ্যার অভিনীত নাটক। দায়বদ্ধতা থেকেই দু’ঘন্টা উয়িংসয়ের পাশে ছিলাম

নাটকের পর গান। গোটা তিনেক গান শুনলাম/দেখলাম। গায়কের নাম মনে নেই, তবে আয়োজকদের কাছ থেকে শুনেছিলাম, “সা রে গা মা পা”র থেকে সোনার গীটার প্রাপ্ত আর অনুষ্ঠানের দু’দিন আগে গায়কের সেক্রেটারীর হাতে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা গায়কের পারিশ্রমিক বাবদ দিতে হোয়েছিল।

অখিলবন্ধু ঘোষকে প্রণাম !

শতবর্ষে নির্জন, আত্মমগ্ন অখিলবন্ধু


SONGS OF AKHILBANDHU GHOSH

অখিল বন্ধু ঘোষ ছাড়া বাংলা গানের জগৎ অসম্পূর্ণ।

অখিলবন্ধু ঘোষ (Akhilbandhu Ghosh ( ২০ অক্টোবর, ১৯২০ – ২০ মার্চ, ১৯৮৮) ছিলেন বিখ্যাত বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী। জন্ম কলকাতার ভবানীপুরে। তার পিতা বামনদাস ঘোষ, মাতা মণিমালা। তিনি সঙ্গীতের শিক্ষা নেন সংগীত গুরু কালিদাস গুহ, নিরাপদ মুখোপাধ্যায়, পণ্ডিত কে জি ঢেকন ও চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে। বাংলা গানে তিনি এক নতুন মাত্রা সংযোজন করেছেন। বাংলা আধুনিক গানকে রাগাশ্রয়ী করার পিছনে তার অবদান অনেকখানি। অখিলবন্ধুর আদি বাড়ি নদিয়ার রানাঘাটের নিকটে হলেও আসলে তাঁরা বালির বিখ্যাত ঘোষ পরিবারের বংশধর। অখিলবন্ধুর চাকদায় মামাবাড়িতে মানুষ হন। মামা কালিদাস গুহ-র জন্যেই সঙ্গীতের প্রতি ঝোঁক। কলকাতার ভবানীপুরে চলে আসার পর থেকেই সঙ্গীতজীবনের সূচনা হয় তাঁর।

তাঁর জনপ্রিয় গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য :

  • সেদিন চাঁদের আলো চেয়েছিলো জানতে
  • পিয়াল শাখার ফাঁকে ওঠে
  • তোমার ভুবনে ফুলের মেলা
  • ও দয়াল বিচার কর
  • ঐ যে আকাশের গায় দূরের বলাকারা ভেসে যায়
  • কেন তুমি বদলে গেছ
  • যেন কিছু মনে করোনা, কেউ যদি কিছু বলে

বেঁচে থাকতে মেলেনি যোগ্য স্বীকৃতি, শতবর্ষেও অবহেলিত অখিলবন্ধু ঘোষ

RABI ROY The Blogger

No comments:

Post a Comment